Sultan Osman Ghazi

                      সুলতান ওসমান গাজি

  সুলতান ওসমান গাজির স্থির চিত্র( ১২৫৮-১৩২৬)

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে মহত্বপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ সম্রাজ্যগুলোর এাকটি হলো সালতানাতে ওসমানীয়া, ইংরেজিতে যাকে অটোমান এম্পায়ার বলা হয়। তুর্কী ভাষায় এই সম্রাজ্যের নাম হলো 'দেভলেত-ই-আলিয়ে ওসমানিয়া ' অর্থাৎ ওসমানের সন্তানদের রাষ্ট্র। এই সম্রাজ্য ওসমান গাজির হাত ধরে ১৩০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে এটি একটি ছোট্ট বেইলিক বা রাজ্য হলেও ওসমানের সন্তানরা সেটাকে সময়ের সবচেয়ে বড় সম্রাজ্যে পরিণত করে। প্রায় ৪০০ বছরের অধিক সময় নিয়ন্ত্রণ করেছে বিশ্ব রাজনীতি। এই অনুচ্ছেদে আমরা এই মহান সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ওসমান গাজি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।

ওসমান ১২৫৮ সালে আনাতোলিয়ার( তুরস্ক) সোগুত শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। ওসমানের পিতা আরতুগ্রুল ছিলেন ছোট্ট একটি বেলিক বা রাজ্যের শাসক। মা হালিমা হাতুন ছিলেন এক মহীয়সী নারী। তিনি একজন সেলজুক শাহজাদী ছিলেন। যে বছর ওসমানের জন্ম হয় ঠিক সে বছরই মোঙ্গল সেনাপতি  হালাকু খানের আক্রমণে মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আব্বাসীয় খিলাফতের পতন হয়। ইসলামের সূর্য ঢেকে যায় বিষাদের কালো মেঘে। ওসমানের জন্ম যেন সেই কলো মেঘকে ভেঙে দিয়ে ইসলামের সূর্যকে পুনরায় তার ঝলমলে সোনালি আলো ফিরিয়ে আনার জন্যই হয়েছিল। মোঙ্গলদের বিরুদ্ধে মামলুক বা ফাতেমিয়রা রুখে দাঁড়ালেও বিশ্ব ব্যাপি ইসলামের গৌরব পুনরুদ্ধার করতে ব্যার্থ হয়। যদিও সেসময় ওসমানের রাজ্য অনেক ছোট ছিল কিন্ত ওসমানের সন্তানরা এই ছোট্ট রাজ্যকে তিনটি মহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত করে ইসলামের সেই হারানো গৌবর পুনরুদ্ধার করে।

ওসমানের স্বপ্ন:

ওসমান যখন পরিপূর্ণ যুবক তিনি তখন বাবার বন্ধু শেখ এদেব আলীর বাড়িতে দাওয়াতে গিয়েছিলেন। দাওয়াতে রাতের ভোজ সেরে নিজের শোয়ার ঘরে ঢুকে দেখলেন ঘরের তাকে একখানা কুরআন শরীফ রাখা আছে। ঘরে কুরআন শরীফ থাকা অবস্থায় ঐ ঘরে শোয়া ওসমান আদবের খেলাফ মনে করলেন। ওসমান দাড়িয়ে রইলেন, ভাবলেন রাতে ঘুমাবেন না। সরা রাত জেগে থাকলেন কিন্তু ভোর হওয়ার পূর্ব ক্ষণে ওসমানের চোখজোড়া ঘুমিয়ে পড়ে। এই ঘুমেই ওসমান তার বিখ্যাত স্বপ্নটি দেখলেন। এ স্বপ্নটি ছিল একটি অদ্ভুত  স্বপ্ন। স্বপ্নে ওসমান দেখলেন শেখ এদেব আলীর বুক থেকে একটি চাঁদ বের হয়ে ওসমানের বুকে মধ্যে ঢুকে গেল। পরক্ষণেই ওসমানের বুক থেকে বড় একটি গাছ গজিয়ে ওঠলো। আস্তে আস্তে এই গাছটির শাখাপ্রশাখা চারটি পর্বতমালা ১.বলকান ২.আলবুর্জ ৩.ককেশাস আর ৪.আটলাসকে ছাড়িয়ে গেল। গাছের শেকড় থেকে বইতে শুরু করল বিখ্যাত চারটি নদী, দানিউব, ইউফ্রেটিস, তাইগ্রিস ও নীল। পাতাগুলো রুপ নিল তরবারি আর বর্ষার ফলায়। হাঠাৎ বাতাস বইতে শুরু করল কনস্টান্টিনোপলের দেকে, বসন্তের বাতাস, সে বাতাসে পাতাগুলো তলোয়ার আর বর্ষা হয়ে কনস্টান্টিনোপলে যাচ্ছে। একসময় এ শহরটি একটি চকচকে আংটিতে রুপ নিল। ওসমান সে আংটিটি আঙুলে লাগানোর সময় তার ঘুম ভেঙে যায়। 

এই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে ওসমান কিছুটা হয়রান হয়ে তার পীর শেখ এদেব আলীকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন। স্বপ্নের কথা শুনে এদেব আলী অনেক আনন্দিত হলেন এবং ওসমানকে ভবিষ্যতে বাদশা হওয়ার সুসংবাদ দেন আর তার মেয়ে রাবেয়া বালা হাতুনকে ওসমানের কাছে বিয়ে দেন। এই স্বপ্ন পরবর্তী সময়ে অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হয়। ওসমান বাদশা হন আর সন্তানরা তার এই সালতানাতকে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা পর্যন্ত বর্ধিত করে।

মানচিত্রের ঘন অংশটি আরতুগ্রুল গাজির প্রতিষ্ঠিত বেইলিক।উজ্জ্বল অংশটি ওসমান বের প্রতিষ্ঠিত রাজ্য


ওসমানের ক্ষমতা লাভ:

১২৮১ সালে আরতুগ্রুল গাজি ইন্তেকাল করলে ওসমান তার স্থলাভিষিক্ত হন। উল্লেখ্য যে ওসমান আরতুগ্রুলের তৃতীয় ও সবার ছোট ছেলে ছিলেন। ওসমান তার নিজ যোগ্যতা ও নেতৃত্ব গুণেই সিংহাসন লাভ করেছিলেন, তার বড় ভাই গুনদুজ বে ও মেঝ ভাই সারা বাতু সাভজি বে'রা ওসমানের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলো। ওসমানের নেতৃত্বেই তারা বাইজান্টাইনদের বিরুদ্ধে জীহাদ করতে থাকেন। ওসমান ক্ষমতা লাভের পর বাবার নীতি অনুযায়ী শাসন পরিচালনা করছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওসমান বাইজান্টাইনদের সীমান্তবর্তী অঞ্চলসমূহে অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। ১২৮১-১৩০০ সাল পর্যন্ত ওসমান বাইজান্টাইন সীমান্তে ছোট ছোট অভিযান পরিচালনা করেছেন। তিনি বাইজান্টাইন সম্রাজ্যের এসকিশেহির, ইনেগুল, গয়নুকের দূর্গগুলো ও বিলেজেক বেইলিক দখল করে তার শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

বাফিউসের যুদ্ধ :

ক্ষমতা লাভের পর থেকে ২০ বছর সময়কাল পর্যন্ত ওসমান বাইজান্টাইন সীমান্তের জমিদারদের ওপর আক্রমণ করে দখল করে নিয়ে ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩০১-১৩০২ সালে বাইজানটাইন সম্রাট ২য় আদ্রিনিকোস ওসমানকে দমন করার জন্য ১০০০০ সৈন্য সমেত অভিযান পরিচালনা করেন। ওসমান জানতেন যে এত বড় সৈন্যদলের মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট সামর্থবান সৈন্যবাহিনী ওসমান এখন অবদি গড়ে তুলতে পারেননি। তাই ওসমান তার সৈন্যদের নিয়ে আনাতোলিয়ার গভীর জঙ্গলে লুকিয়ে পড়েন। বাইজান্টাইন সম্রাট কয়েক মাস খুজাখুজি করে ব্যার্থ হয়ে কনস্টান্টিনোপল চলে গেলেন। সম্রাটের ফিরে যাওয়ার পরই ওসমান আবার তার কাজ শুরু করে দেন। আদ্রয়ানিকোস এবার ওসমানকে শায়েস্তা করার জন্য সেনাপতি মুজোলানের নেতৃত্বে ২০০০ সৈন্য পাঠান। মুজোলানের বাহিনী সারকাজি নদীর তীরবর্তী বাফেউস মালভূমিতে ঘাটি গাড়ে। ওসমান তার গুপ্তচরদের মাধ্যমে খুব দ্রুতই খবর পেয়ে যান। ওসমান তাদের সরাসরি আক্রমণ না করে গেরিলা আক্রমণের পরিকল্পনা করলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওসমানের প্রধান সেনাপতি তুরগুত বে বাফেউস মালভূমির ঢালু দিকটায় ঝোপের মধ্যে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে থাকেন। রাতের আধারে উত্তর দিক থেকে যখন ৫০০ ঘোর সাওয়ারের একটি ছোট বাহিনী বাইজান্টাইন বাহিনীর উপর ঝাপিয়ে পড়ল।বাইজান্টাইনরা সংখ্যায় বেশি হলেও আচমকা আক্রমণে তারা ভয় পেয়ে যায়। খ্রিস্টান বাহিনী দক্ষিণ দিকে পালাতে লাগলো, এখানেই তুরগুত বে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। বাইজান্টাইনরা তুরগুতের সৈন্যদলের কাছে আসতেই তুরগুত বে তীর ছোরার আদেশ দিলেন, শুরু হলো তীরের বৃষ্টি, মরতে লাগল মুজোলানের বাহিনীর সৈন্যরা। কোনো উপায় না দেখে বাইজান্টাইন বাহিনী পশ্চম দিকে ছুটতে লাগলো, সেখানেই ওসমান তার মূল বাহিনী নয়ে অপেক্ষা করছে। মুজোলান প্রথম দুটি ধাক্কা সামলে ওঠে পশ্চিম দিকে এগুচ্ছিলেন, তখনই ওসমান গাজি হাকদির আল্লাহ স্লোগান দিয়ে বাইজান্টাইন বাহিনীর সামনে চলে আসেন। তা দেখে মুজোলান হতভম্ব হয়ে গেলেন। তিনি দেখতে পেলেন ওসমানের বাহিনী তার বাহিনীর দিগুণ, আবার তারা তিন দিক থেকে ঘেরাও হয়ে গেছ। মুজোলান লক্ষ করলেন এখন বাঁচতে হলে নদী পার হতে হবে, তাই তারা যুদ্ধে রক্ষণাত্মক হয়ে ঢালের দেয়াল তৈরী করল। ওসমান তখন ঘোড়সাওয়ার বাহিনীকে আক্রমণের আদেশ দিলেন। ওসমানের অশ্বারোহী বাহিনী বাইজান্টাইন বাহিনীর দেয়াল ভেঙে তীর নিক্ষেপ করতে লাগল, মৃত্যুর মিছিলও চলতে থাকল। অবশেষে বাইজান্টাইনরা নদী পার হয়ে পালাতে সক্ষম হলো। ওসমান বিজয়ি হলেন। এই যুদ্ধটি ছিল একটি ছোট যুদ্ধ কিন্তু এর প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। এ যুদ্ধ জয়ের ফলে ওসমান ও তার বাহিনীর আত্মবিশ্বাস ও মনোবল অনেক শক্ত হয়। এ যুদ্ধই ছিল বাইজান্টাইনদের এশিয়া থেকে বিতাড়নের সূচনা।

দিনবোজের যুদ্ধ ও ইয়েনিশেহির দখল   :

বাফেউসের যুদ্ধে পরাজয়ের ২ বছর পর রোমান সম্রাট ২য় আদ্রিয়ানিকোস ওসমানের বিরুদ্ধে আবার অভিযানে আসেন। বাইজান্টাইন বাহিনী ইয়েনিশেহিরের পার্শ্ববর্তী দিনবোজ প্রান্তরে অবস্থান নেয়। দুই বাহিনীর মধ্যে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়, উভয় পক্ষেরই অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়। এ প্রাণঘাতী যুদ্ধ ওসমানের ভাতিজা আইদৌলু শহীদ হয়। সম্রাটকে পরাজিত করে ওসমান ইয়েনিশেহিরও দখল করে নেন। ইয়েনিশেহির হলো রোমানদের থেকে দখল করা ওসমানীয়দের প্রথম শহর। এই যুদ্ধ জয়ের পর ওসমান নিজেকে সুলতান ঘোষণা করেন এবং রাজধানি সগুত থেকে ইয়েনিশেহিরে স্থানান্তর করেন। দিনবোজের যুদ্ধের মাধ্যমেই পৃথিবীর বুকে নতুন আরেকটি সালতানাত প্রতিষ্ঠিত হয়। ওসমানের সেই অদ্ভুত স্বপ্ন এখন সত্য প্রমাণিত হলো।

দিনবোজের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে সম্রাট ২য় আদ্রিয়ানিকোস বুঝতে পারলেন যে আনাতোলিয়ায় একটি স্থায়ি ও বড় সমস্যার উদ্ভব হতে চলছে। তাই সম্রাট ওসমানকে দমনের জন্য মোঙ্গলদের ডাকলেন। ওসমান বীরত্বের সাথে মোঙ্গলদের মোকাবেলা করেন। উপায় না দেখে সম্রাট তার মেয়ে আসপোর্চা হাতুনকে(মুসলমান হওয়ার পরবর্তী নাম) শাহজাদা ওরহান আল্পের সাথে বিয়ে দিয়ে ওসমানের সাথে সন্ধি করতে চাইলেন। ওসমান সে সন্ধি করতে রাজি হলেন। ১৩১৬ সালে ওরহান ও আসপোর্চা হাতুনের বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বুরসা অবরোধ :

ওসমান গাজির বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তিনি নানা বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হন। বাবার অসুস্থতার ফলে ছেলে ওরহান গাজি বাবার হয়ে রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব নেন। ওরহান তত্ত্বাবধানে রাজ্যের শাসনকার্য চলতে থাকে। বাইজান্টাইন সম্রাটের সাথে ওসমানের শান্তিপূর্ণ সন্ধি বেশিদিন টেকেনি। ওরহানের সাথে প্রিন্সেস আসপোর্চার বিয়ের তিন বছর পর ওরহান ১৩১৯ সালে বুরসা শহর অবরোধ করে। সাত বছর যাবত এ অবরোধ চলে। খাবারের অভাবে শহরের বাসিন্দারা পালাতে থকে। ওরহান খুব দক্ষতার সাথে এই অভিযানের নেতৃত্ব দেয়। অবশেষে ১৩২৬ সালে বুরসা শহরের বাইজান্টাইন গভর্নর ওরহানের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং বুরসা ওসমানীয়দের নিয়ন্ত্রণে আসে। এরই মধ্যে ওরহান খবর পান বাবা সুলতান ওসমান গাজি মৃত্যু শয্যায়, মৃত্যুর আগে তিনি ওরহানকে একবার দেখতে চেয়েছন। ওরহান দেরি না করে অসুস্থ বাবার কছে চলে আসলেন আর বুরসা জয়ের সুসংবাদ শুনালেন। ওসমানেরও বুরসা জয়ের স্বপ্ন ছিলো, ছেলের মাধ্যমে সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় তিনি শুক্রিয়া আদায় করলেন। কিন্তু সুলতান ওসমান গাজি বুঝতে পরাছিলেন যে তার মৃত্যুর সময় এসে গেছে, তিনি প্রিয় ছেলে ওরহানকে কাছে ডেকে নিলেন আর প্রয়োজনীয় উপদেশ দিতে থাকেন, এ উপদেশসমূহ পরবর্তী ওসমানীয় সুলতানদের কছে তাদের শাসন নীতি হিসেবে জায়গা করে নেয়।

ওরহানের প্রতি বাবা ওসমানের উপদেশ :

মৃত্যু পূর্বে সুলতন ওসমান গাজি তার ছেলে ওরহানকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ প্রদান করে গিয়েছিলেন। এই উপদেশসমূহ সুলতান ওসমান একজন সুলতান হিসেবে নয় বরং একজন বাবা হিসেবে তার সন্তানকে দিয়েছিলেন। ওরহান তার শাসনকলে বাবার উপদেশসমূহ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল।

ছেলের প্রতি বাবার উপদেশ :

১. প্রিয় বাবা আমার, আল্লাহ তোমাকে যে কাজের আদেশ করেননি তা করা থেকে তুমি বিরত থাকবে। শাসন কার্যে কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে ওলামায়ে কেরামদের পরামর্শকে আশ্রয়স্থল হিসেবে গ্রহণ করবে।
২. প্রিয় সন্তান, তোমার অধিনদের যথাবিহিত সম্মান করবে, সৈন্যদের অনুগ্রহ করবে। তোমার সৈন্য ও সম্পদের মাধ্যমে শয়তান যেন তোমাকে ধোকা না দিতে পারে। আহলে শরিয়ত থেকে দূরে থাকা হতে বেঁচে থাকবে।
৩. হে পুত্র, তুমি নিশ্চয়ই জানো আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে খুশি করা। তাই যা বলবে আল্লাহর সন্তষ্টির লক্ষে বলবে।
৪. প্রিয় পুত্র, যারা শাসনের লোভে ও একক নিয়ন্ত্রণের লক্ষে যুদ্ধ করে আমরা তাদের দলভুক্ত নই। আমরা ইসলামের জন্যই বাঁচব আর ইসলামের জন্যই মরব, হে পুত্র এটার জন্যই তুমি যোগ্য।

নিজ সন্তানকে প্রয়োজনীয় উপদেশ দিয়ে সুলতান ওসমান গাজি পরিবারের সবাই কাঁদিয়ে ১৩২৬ সালের ১লা আগস্ট মৃত্যুর দরজা পেরিয়ে ফিরে গেলেন নিজের রবের কাছে। ওসমাম গাজির মৃত্যুর পর তার ছেলে ওরহান বাবার সিংহাসনে আরোহন করেন।

সুলতান ওসমান গাজি ছিলেন একজন সত্তিকারের শাসক। তিনি একাধারে ছিলেন বীর যোদ্ধা, ন্যায়পরাণ শাসক। প্রজাদের প্রতি তিনি উত্তম আচরণ করতেন। তাদের জন্য সর্বদাই ওসমানের দরজা খোলা থাকতো। তার মহানুভবতায় আকৃষ্ট হয়ে অনেক খ্রিস্টানও ইসলামের ছায়াতলে এসেছিল।

সূত্র:

১. Osman's dream, Caroline Finkel 
২. সানজাক ই ওসমান, প্রিন্স মুহাম্মদ
৩. মুহাম্মদ আল ফাতিহ, আলি মুহাম্মদ সাল্লাবী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ