Chengiz Khan

     

চেঙ্গিস খান(১১৬২-১২২৭)   

     

মঙ্গোল সম্রাজ্য, এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সবচে বড় সম্রাজ্য। মধ্যএশিয়া, ভারতবর্ষের উত্তর অংশ,  চীন, তুর্কিস্তান, ককেশাস, রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই মঙ্গোল সম্রাজ্য। চেঙ্গিস খান ও তার ছেলেদের মাত্র তিন দশক সময় লেগেছিল এই বিশাল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে। এত কম সময়ে এত বিশাল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার  নজির এটিই প্রথম এবং শেষ। বিজেতা আলেকজান্ডারের বিজিত সম্রাজ্যের চেয়ে পাঁচ গুণ বড় ছিলো চেঙ্গিস খানের প্রতিষ্ঠিত মঙ্গোল সম্রাজ্য।

এ সম্রাজ্য যেমন নিষ্ঠিরতা, নির্মমতা ও নিরপরাধ মনুষের তাজা রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত, তেমনই প্রতিষ্ঠিত চেঙ্গিস খানের সাহসিকতা, বীরত্ব, অনুগত ও মিত্রদের প্রতি তার মহানুভবতা, বদান্যতা ও সমর দক্ষতার উপর। চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বেই মঙ্গোলরা বিক্ষিপ্ত যাযাবর গোত্র থেকে একটি একক জাতি এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও অপ্রতিরোধ্য বিশ্বশক্তিতে পরিণত হয়। ইংরেজিতে একটি কথা আছে যে "One empire is to rise, another must fall" চেঙ্গিস খান এ প্রবাটিকে মিথ্যা প্রামাণ করেননি কন্তু কিঞ্চিৎ সংস্কার করেছেন বটে। মঙ্গোল সম্রাজ্যের ক্ষেত্রে একথাটি একটু ঘুরিয়ে এভাবে বলা যায় যে "One empire is to rise, many must fall"। মঙ্গোল সম্রাজ্য তার বিস্তার করতে গিয়ে একে একে চীনা সম্রাজ্য, তাতার সম্রাজ্য, খাওয়ারিজম সম্রাজ্য, আব্বাসীয় খিলাফত, সেলজুক সম্রাজ্যসহ ইউরোপীয় বাইজানটাইন সম্রাজ্যের প্রায় অর্ধেক এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু বিক্ষিপ্ত এ মঙ্গোল যাযাবরদের ঐক্যবদ্ধ করে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা অতটা সহজ ছিল না। এজন্য চেঙ্গিস খানকে অনেক সংগ্রাম ও পরিশোধ করতে হয়েছে। তাহলে চলুন চেঙ্গিস খানের সংগ্রাম আর বিরত্বের ইতিহাস সম্পর্কে অমরা অবগত হই।

চেঙ্গিস খানের পরিচয় :
                                   চেঙ্গিস খানের জন্মের সঠিক সময় জানা যায়নি। অধিকাংশ ইতিহাসবিদদের মতে ১১৫৫ বা ১১৬৭ সালে হোয়েলুনের গর্ভে বোর্গিজিন গোত্রে চেঙ্গিস খানের জন্ম হয়। তার জন্মের সময় পিতা ইয়েসুগেই তাতারদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। ফলে ছেলের জন্মের সময় তিনি স্রীর কাছে উপস্থিত থাকতে পারেননি। ইয়েসুগেই বীর দর্পে তাতারদের পরাজিত ও তাদের সেনাপতি তেমুজিনকে হত্যা করে বীরেরবেশে গোত্রে ফিরে আসেন। ফিরে এসেই খুশির সংবাদ শুনে আনন্দে তার যুদ্ধ ক্লান্তি চলে গেল। তিনি লক্ষ করলেন নবজাতকের হাতের মুঠোয় এক টুকরো জমাট বাঁধা রক্ত লাল আভা ছড়াচ্ছে। মঙ্গোলদের বিশ্বাস ছিল যে এভাবে জম্ম নেয়া কোন বীরই তাতারদের সমূলে বিনাশ করবে। এদিকে লক্ষ রেখেই পিতা ইয়েসুগেই নবজাতকের নাম রাখেন তাতার নেতার নামানুসারে তেমুজিন। তেমুজিনের বয়স যখন নয় বছর তখন তার বাবা তাকে মাতুলালয়ে নিয়ে যান। পথিমধ্যে কানকারাত(মঙ্গোলদের একটি শাখা গোষ্ঠী)গোত্রের প্রধানের সাথে দেখা হয়। তিমি তেমুজিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করে তার মেয়ে বোর্তেকে তেমুজিনের সাথে বিয়ে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ইয়েসুগেই এ প্রস্তাব মেনে নিলেন এবং প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলে দুজনের বিয়ে হবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে দুজনে আপন গন্তব্যের দিকে রওনা হলেন।
চেঙ্গিস খানের মাতুলালয়ে তার পিতা ইয়েসুগেইকে খাদ্যে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করা হয়। ধারণা করা হয় তাতাররা এ ষড়যন্ত্রের মূল হোতা।

ইয়েসুগেই পরিবারের দূর্দশা :
                                           তেমুজিনের পিতা ইয়েসুগেইয়ের হঠাৎ ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মৃত্যুতে তার পরিবারের ওপর নেমে আসে চরম দৈন্যতা, দুঃখ ও দুর্দিন। ইয়েসুগেই এর মৃত্যুর কয়েক দিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন গোত্র ইয়েসুগেই পরিবার ও নতুন নেতা শিশু তেমুজিনের প্রতি আনুগত্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। মুলত ইয়েসুগেই নিজ চেষ্টায় কিছু যেসকল মোঙ্গল গোত্রকে তার পতাকার ছায়াতলে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন তারাই তেমুজিনের নেতৃত্ব অস্বীকার করে তাকে ছেড়ে বিভিন্ন দিকে চলে গিয়েছিল। ফলে তেমুজিনের পরিবার একটি নেতৃস্থানীয় পরিবার থেকে সাধারণ মঙ্গোল পরিবারে পরিণত হয়। তেমুজিনের মা হোয়েলুন পরিবারের ভরণপোষণের জন্য জঙ্গল থেকে ফল কুড়িয়ে আনতেন, তেমুজিনসহ তার অন্যান্য ভাইরা নদী থেকে মাছ শিকার করে এনে মায়ের কাজকে সহজতর করার চেষ্টা করতো। এই কষ্টের সময়েই তেমুজিন তার জীবনের চলার পথের কঠিন নীতিগুলির সাথে পরিচিত হয়েছিল। পরিবারের এমন পরিস্থিতিই তাকে শক্তহাতে শত্রুর মোকাবিলা করা শিখিয়েছে। একজন বীর যোদ্ধা হিসেবে তাকে তৈরি করেছে এই কষ্টকর দুর্দশাগ্রস্থ পারিবারিক পরিস্থিতি
হঠাৎ একদিন তেমুজিন ও তার ভাই খাসার মিলে তাদের সৎ ভাই বেখতারকে হত্যা করে। হত্যা করার পিছনে একটা উপযুক্ত কারণও ছিল। বেখতার তার সৎ মা অর্থাৎ তেমুজিনের মাকে বিয়ে করতে চাইল, মঙ্গোল রীতিতে এমনটা করা বৈধ ছিল। এ বিষয় নিয়েই বেখতারের সাথে তেমুজিন ও খাসারের তর্ক বেধে যায় এবং তর্কের পরে ঝগড়া ও হত্যা। এই হত্যাকান্ডের পর তেমুজিনের পরিবারে নেমে এলো আরও বড় বিপদ। তৈয়ুচিদ গোত্রের দস্যুরা তেমুজিনকে তৈয়ুচিদদের দাস বানিয়ে বন্দী করা হয়। প্রায় এক বছর তেমুজিন তৈয়ুচিদদের দাস হিসেবে বন্দি ছিলেন। কন্তু এক রাতে তেমুজিন তৈয়ুচিদদের তাবু থেকে পালিয়ে নিজ তাবুতে ফিরে আসতে সক্ষম হলেন।

তেমুজিনের পূণরুত্থান :
                                   শিশু বয়সে তেমুজিন ছিলেন অসহায় শিকারের ন্যায়, কিন্ত এখন ষোল বয়সে পা রেখে ছেলেটার একজন দক্ষ শিকারি হয়ে ওঠার ইচ্ছা জাগলো। পরিবারের সেই কষ্টের দিলগুলোতে তেমুজিন শিখেছিলেন পৃথিবীতে বাচতে হলে শক্তির প্রয়োজন হবে। তেমুজিন তৈয়ুচিদদের তাবু থেকে পালিয়ে এসে একটি বাহিনী গঠন করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তেমুজিনের সাথে যোগদিল তার বাল্য বন্ধু বরচু ও জেলমি। একটু একটু করে তারা একটি মোটামুটি শক্তিশালী বাহিনী গঠন করতে সক্ষম হলেন। এ বাহিনী গঠন করার পর তেমুজিন বাগদত্তা বোর্তেকে বিয়ে করে তার তবুতে নিয়ে নেয়ে আসলেন, এভাবেই কেটে গেল কয়েক বছর। তেমুজিনের পরিবারের সাথে মেরকিত গোত্রের একটি পুরনো শত্রুতা ছিল। মেরকিত হলো তেমুজিনের মা হুয়েলুনের গোত্রের নাম, ইয়েসুগেই হুয়েলুনকে মেরকিত গোত্র থেকে তুলে নিয়ে এসে প্রথমে দাসী, পরে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেন। কিন্তু এ বিয়ে মেরকিতরা কখনো মেনে নিতে পারেনি, তাদের মধ্যে প্রতিশোধ নেয়ার আগুন জলে ওঠে। ইয়েসুগেই এর জীবদ্দশায় তারা এমন দুঃসাহস দেখায়নি। কিন্তু যখনই তারা তেমুজিনকে ইয়েসুগেইয়ের তুলনায় দূর্বল দেখল তখনই তারা তেমুজিনের তাবুতে আচমকা হামলা চালায়। এমন অবস্থায় তেমুজিনের তাবুর পুরুষরাই পালাতে পেরেছিল। হুয়েলুন ও বোর্তে দজনই মেরকিতদের হাতে বন্দী হলো। মেরকিতরা তেমুজিনের স্রীকে দাসী হিসেবে ব্যবহার করল। তেমুজিন প্রায় এক বছর পর একজন শক্তিশালী মঙ্গোল শাসক তুঘগ্রুল খানের সহযোগিতায় মেরকিতদের থেকে স্ত্রী  বোর্তে ও মা হুয়েলুনকে উদ্ধার করেন। অনেক বছর পর তেমুজিন এই মেরকিতদের পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করে  দিয়েছিলেন। বোর্তের অপহরণ তেমুজিনের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তিনি বুঝতে পারলেন যে মঙ্গোলীয়ার বিশাল সমভূমিতে টিকে থাকতে হলে শক্তির কোন বিকল্প নেই যেমনটা একটি তাতার প্রাবাদে বলা হয়েছে " ইরিন মোর নিগেন বুই" অর্থাৎ যুদ্ধই জীবন, তাই তাকে ক্ষমতাবাম হতে হবে। এই লক্ষে তেমুজিন মঙ্গোল গোত্রগিলোকে এক পতাকাতলে আনার চেষ্টা করতে থাকেন।
 
তেমুজিমের মৈত্রি চুক্তি :
                                    মোঙ্গোল গোত্রগুলোকে একত্রিত করার লক্ষেই তেমুজিন প্রথমে তার পিতার বন্ধু তুঘরুল খানের সাথে একটি মৈত্রী চুক্তি করেন। তুঘরুল খানের প্রস্তাব মঙ্গোলিয়ার জাসিরাত গোত্রের প্রধান জামুখা স্বপ্রণোদিত হয়ে তেমুজিনের মৈত্রিচুক্তিতে যুক্ত হন। কিছুদিনের মধ্যেই তেমুজিন ও জামুখার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর হয়ে ওঠে যেমনটা দুজন সহোদরের মধ্যে হয়ে থাকে। তেমুজিন ও জামুখা একে অপরকে রক্ত শপথের ভাই(Blood brother)বলে সম্বোধন করতেন। এই 5 মাধ্যমে অনেকগুলো মঙ্গোল গোত্র এক পতাকা তলে আসে। এই গোত্রগুলোর বেশিরভাগই তেমুজিনের নেতৃত্ব ও বাহাদুরির ওপর ভরসা করে। তেমুজিনের এমন সফলতাই তার জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাড়ালো। জামুখা ও তেমুজিনের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে দন্দ বেধে যায়। জামুখা তার গোত্র ও অনুসারীদের নিয়ে মৈত্রিচুক্তি ভঙ্গ করে চলে যান, তবে অধিকাংশ গোত্রই তেমুজিনের সাথে রয়ে গেল। জমুখা তেমুজিনকে ছেড়ে চলেগেলেও তেমুজিন তাকে অবিশ্বাস করতেননা। কিন্তু জমুখা সে বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা না করে তেমুজিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ১১৮৭ সালে তেমুজিন ও জমুখার মধ্যে যুদ্ধ হয় এবং তেমুজিন সে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এর পর প্রায় দশ বছর তেমুজিন কি করছিলেন তা জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় এ সময় তিনি একটি শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত বাহিনী গঠন করেছিলেন। এরপর ১১৯৬-১২০২ সালের মধ্যে তেমুজিন তাতার ও তুঘরুল খানকে পরাজিত করেন। ১২০৩ সালে জমুখা নাইমান গোত্রকে নিয়ে শেষবারের মতো তেমুজিনের মোকাবিলা করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু জৃুমিখার বাহিনী তেমুজিনের বাহিনীর মতো অত বিশ্বস্ত ছিল না। তারা যুদ্ধের এক পর্যায়ে তেমুজিনের নিকট থেকে পুরষ্কার পাওয়ার লোভে জমুখার পক্ষ ত্যাগ করে তেমুজিনের সাথে যোগ দেয় এবং জমুখাকে বন্দী করে তেমুজিনের কছে নিয়ে আসে। তেমুজিন জমুখাকে মুক্ত করে দিয়ে তাকে তার সাথে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। জমুখা এ অনুরোধ ফিরিয়ে দেন এবং বলেন যে "এক পৃথিবীতে দুটি সূর্য থাকেনা"। একথা বলে জমুখা তেমুজিনের কাছে মেরুদণ্ড ভেঙে রক্তপাতহীন মৃত্যুর চাইলেন। জমুখাকে তার অনুরোধ অনুযায়ী মেরুদণ্ড ভেঙে হত্যা করা হয়। ১২০৫ সালে তেমুজিন মঙ্গোল স্তেপের সকল মঙ্গোলীয় গোত্রগুলোকে বসন্তে একটি কুরুলতাইয়ে( মঙ্গোল গোরগুলোর সভা) আসার আদেশ দিলেন। এ কুরুলতাইয়ে মঙ্গোল গোত্রগুলো তেমুজিনকে নিজেদের ও সমস্ত মঙ্গোলীয় স্তেপের খান-ই-খানান বা চেঙ্গিস খান উপাধি দিয়ে তার আনুগত্য মেনে নেন, চেঙ্গিস খান হয়ে গেলেন সকল মঙ্গোলদের একচ্ছত্র খান। চেঙ্গিস খানের বয়স এখন চুয়াল্লিশ বছর। চেঙ্গিস খান এখন একজন যাযাবর ও অনেক শক্তিশালী সম্রাট। তার সম্রাজ্যের পশ্চিমে কারা খিতাই সম্রাজ্য, পূর্বে সাইবেরিয়ার এস্কিমো, দক্ষিণে চীনের জিয়া সম্রাজ্য ও দক্ষিণ পূর্বে চীনের আরেকটি শক্তিধর সম্রাজ্য জিন সম্রাজ্য।

১২০৬ সালে পৃথিবীর মানচিত্র
 

জিয়া সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান :

                                                    ১২০৫ সালে মঙ্গোলদের খান বা সম্রাট হওয়ার পর মাত্র দু বছরের মধ্যে চেঙ্গিস খান তার সম্রাজ্যকে একটি শক্তিশালী সম্রাজ্যে পরিণত করেন। সেনা বাহিনীতে বংশের পরিবর্তে যোগ্যতার ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দেয়া হলো। এমন উন্নতির সময় চেঙ্গিস খানের সৈন্যদের সাথে চীনের জিয়া সম্রাজ্যের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ১২০৭ - ১২০৯ সাল পর্যন্ত মঙ্গেল ও চীনাদের মধ্যে ছোট খাটো যুদ্ধ হয়। ১২০৯-১২১০ সালের মধ্যে চেঙ্গিস খান জিয়া সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার জন্য মনস্থির করেন। অভিযানে নামার কিছু দিন আগে জিন সম্রাজ্য জিয়া  সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযানে চেঙ্গিস খানকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। ফলে চেঙ্গিস খান অভিযানের ব্যাপারে আরও নিশ্চত হয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলেন। চীনের হুয়াংহো নদীর তীরে চেঙ্গিস খানের মঙ্গোল বাহিনী ও জিয়া সম্রাটের সামন্ত বাহিনী। হুয়াংহো নদীর তীরে জিয়া সাম্রাট মঙ্গোলদের দুর্বার গতি দেখতে ও যুদ্ধকৌশল দেখতে পেলেন। জিয়া সম্রাজ্যের সুসংগঠিত ও সুসজ্জিত বাহিনী মঙ্গোলদের একটি আক্রমণও প্রতিহত করতে সক্ষম হয়নি। বিশাল জিয়া(Xia Empire) বাহিনী মঙ্গোলদের অভিনব যুদ্ধকৌশল ও সাহসিকতার কাছে অসহায় হয়ে গিয়েছিোলো। যুদ্ধে মঙ্গোলরা খুব সহজেই জয়ী হয়। হাজার হাজার জিয়া সৈন্য প্রাণ হারালো। এমন অবস্থায় জিয়া সম্রাজ্য তাদের চীর শত্রু চীনের আরেক পরাশক্তি জিন সম্রাজ্যের সম্রাটের কাছে সাহায্য চেয়ে পত্র লিখেন। জবাবে জিন সম্রাট মজা করে বললেন যে "শত্রুর আঘাতে শত্রুকে মরতে দেখাতো সৌভাগ্যের ব্যাপার"। কে জামত দুই বছর পর এমন সোভাগ্য জিন সম্রাটের কপালেও লেখা ছিল।  


জিন সম্রাজ্য অধীকার :
                                    জিয়া(Xia) সম্রাজ্যে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠা করে ১২১১ সালে চেঙ্গিস খান চীনের অপর পরাশক্তি জিন সম্রাজ্য দখল করার জন্য অভিযানের প্রস্তুতি নেন। উল্লেখ্য যে জিন বংশ এসেছিল চীনের বাইরে থেকে। সাইবেরিয়ায় জিন বংশের আাদি নিবাস। চীনে জিন বংশ যেসকল অঞ্চল শাসন করতো সেসকল অঞ্চলের বেশিরভাগ জনগণ ছিল হান(han) জাতি গোষ্ঠীর। জিনরা হানদের ওপর অমানবিক জুলুম করতো। ফলে চেঙ্গিস খান যখনই জিন সম্রাজ্যে আক্রমণ করলো তখনই জিন সম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে থাকা হানরা বিশ্বাসঘাতকতা করলো। এই বিশ্বাসঘাতকতার ফল এতটাই মারাত্মক ছিল যে জিনদের বিশাল সৈন্য বাহিনী থাকা স্বত্তেও মঙ্গোলদের কাছে পরাজিত হলো। উল্লেখ্য যে জিন সম্রাজ্যের সৈন্য সংখ্যা মঙ্গোলদের তুলনায় আট গুণ বেশি ছিল। ১২১৪ সালের মধ্যে চেঙ্গিস খানের সম্রাজ্যের সীমানা পূর্বে জাপান সাগর থেকে পশ্চিমে কাজাখস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত হয় মাত্র আট বছরে। চেঙ্গিস খানের এমন উত্থানের পিছনে যতখানি কৃতিত্ব তার ঠিক ততখানি কৃতিত্ব তার প্রতিপক্ষেরও। চেঙ্গিস খানের প্রতিপক্ষরা নিজেরাই নিজেদের পতনকে ডেকে এনেছিলো। চীন দখল করার পর চেঙ্গিস খান তার সেনাপতি জেবে নোয়ান ও সুবুতাই বাহাদুরকে পাঠিয়ে দিলেন কারা খিতাই সম্রাজ্যে দখলের জন্য। এরা প্রথমেই মেরকিতদের শেষ করলো এবং পরে কারা খিতাই সম্রাজ্যও দখল করে নিল। কারা খিতাই সম্রাজ্য জয়ের মধ্য দিয়ে মঙ্গোলরা মধ্য এশিয়ায় প্রবেশ করে। কারা খিতাই জয়ের পর চেঙ্গিস খান এখন বিখ্যাত খাওয়ারিজম সম্রাজ্যের দারপ্রান্তে।

খাওয়ারিজম সম্রাজ্য আক্রমণ :
                                               কারা খিতাই জয় করে চেঙ্গিস খান খাওয়ারিজম শাহ আলাউদ্দীনের কাছে বানিজ্য চুক্তি করতে চাইলেন এবং শাহের কাছে একটি পত্র পাঠালেন। পত্রে চেঙ্গিস খান লিখলেন " I am the khan of the lands of the rising sun while you are the sultan of those of the setting sun. Let us conclude a firm agreement of friendship and peace."। পরে চেঙ্গিস খান সাড়ে চারশো সদস্যের একটি বণিকদল খাওয়ারিজমের উদ্দেশ্য প্রেরণ করলেন। এই বনিকদল ওতরার পৌছতেই ওতরারের খান ইনালচিক খানের( খাওয়ারিজম শাহের চাচা) কাছে খবর গেল যে এ দলটি মঙ্গোলদের গুপ্তচরের দল। খবর পেয়ে ইনালচিক তাদের বন্দী করলেন এবং পরে একে একে সবাইকে হত্যা করেন। চেঙ্গিস খানের কাছে এ খবর পৌছালে তিনি ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করে দুজন সেনাপতির সাথে তার অতি প্রিয় একজন মুসলিম ব্যাক্তি ইবনে কেফরেজ বোঘরাকে শাহের দরবারে দূত হিসেবে পাঠালেন। শাহের দরবারে উপস্থিত হয়ে ইবনে কেফরেজ বোঘরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইনালচিক খানের মাথা দাবি করেন। শাহের সামনে এমন দুঃসাহস দেখানোর অপরাধে সঙ্গে সঙ্গে  কেফরেজ বোঘরাকে শিরশ্ছেদ করা হলো এবং দুইজন সেনাপতির দাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হলো, মাথা কামিয়ে দিয়ে তাদের চেঙ্গিস খানের কাছে পাঠিয়ে দেন। শাহের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজে এতটাই রেগে গেলেন যে তিনি শাহের কাছে আছে আরেকটি চিঠি লিখলেন, চিঠিতে তিনি লিখলেন " সমরের সাধ ছিল, সে সাধ মেটাব"। চেঙ্গিস খান তার বাহিনীকে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন। মাত্র দুই মাসের মধ্যে মঙ্গোলরা ওতরার অবরোধ করে, অবরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন চেঙ্গিস খানের বড় ছেলে জোচি। জোচি আক্রমণের উপর আক্রমণ চালাতে লাগল আর ওতরার শাসক ইনালচিকও বীরের মতো সেসকল আক্রমণ প্রতিরোধ করে যাচ্ছিলেন। জোচির পেছনে পেছনে চেঙ্গিস খানও প্রায় দুই লাখ সৈন্যের একটি বাহিনী নিয়ে ওতরারের দিকে অগ্রসর হলেন। পাঁচ মাস ওতরার দূর্গ রক্ষা করে আসছিলেন ইনালচিক খান কিন্তু রাজধানী থেকে কোন সাহায্য মা পাওয়ায় তিনি মঙ্গোলদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। মঙ্গোলরা তাকে নাক,কান ও মুখে জলন্ত রুপা ঢেলে হত্যা করে। ওতরার জয়ের পর মঙ্গোলরা শহরটিকে একটি মৃত্যু পুরিতে পরিণত করে। ছেলে-বুড়ো-শিশু কেউই ছাড় পায়নি মঙ্গোলদের হাত থেকে। ওতরার জয় করে চেঙ্গিস খান একে একে বুখারা, সমরকন্দ, মাভেরান্নাহারসহ খাওয়ারিজমের বেশ কয়েকটি বড় বড় শহর দখল করে নেন। প্রত্যেকটি শহরকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলা হয়। হত্যা করা হয়ে লাখ লাখ মানুষকে এমনকি শহরের ককুর-বিড়ালগুলোকেও। সম্রাজ্যের এমন পরিস্থিতিতে খাওয়ারিজমের শাহ আলাউদ্দীন মারা যান, তার স্থলাভিষিক্ত হন ছেলে জালালউদ্দিন মিংবার্নু। ক্ষমতা লাভের সময় সুলতান জালালউদ্দীন রাজধানিতে ছিলেননা। জালালউদ্দিন রাজধানীরতে পৌছার পূর্বেই চেঙ্গিস খান রাজধানী উরগঞ্জ দখল করে নেন। ওরগঞ্জ হাত ছাড়া হয়ে গেলে জালালউদ্দিন  অসহায় মঙ্গোলদের চোখ এড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সৈন্য সংগ্রহ করতে থাকেন। চেঙ্গিস খান জালালউদ্দিনের বীরত্ব সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। তাই তিনি সেমাপতি নয়ান খুতুখুলে জালালউদ্দিনের পিছু নেয়ার জন্য প্রেরণ করেন। জালালউদ্দিনও জামতেন যে মঙ্গোলরা তার পিছু নেবেই তাই তিনি মঙ্গোলদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হিন্দুকুশ পর্বতের নিকট পারওয়ান উপত্যকায় নিয়ে আসেন। এমন উঁচু ও পাহাড়ি অঞ্চলে মঙ্গোলরা কখনো যুদ্ধ করেনি এবং এই উঁচু ভূমিতে তাদের নিশ্বাস নিতেও বেগ পেতে হচ্ছিল। এভাবে মঙ্গোলদের দূর্বল করে হাঠাৎ পাহাড়ের খাদ থেকে বেরিয়ে এসে জালালউদ্দিন তার বাহিনী নিয়ে মঙ্গোলদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে মঙ্গোলদের কচুকাটা করলেন, প্রাণ নিয়ে পালালো মঙ্গোল সেনাপতি নয়ান খুতুখু। পারওয়ানের এ পরাজয় ছিলো চেঙ্গিস খানের জীবদ্দশায় মঙ্গোলদের প্রথম পরাজয়।

জালালউদ্দিনের বাহিনীতে দন্দ :                                              
                                                 যুদ্ধে জয়লাভ করে মুসলিম বাহিনী গণিমতের মালামাল ভাগাভাগি করছিল আর আনন্দ করছিল। এমন সময় গণিমতের একটি সাদা আরব্য ঘোড়ার বন্টন নিয়ে এক কিপচাক ও আরেক আফগান সৈন্যের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়, বিবাদের এক পর্যায়ে আফগান সৈন্যটি তার মগুর দিয়ে কিপচাক সৈন্যটির মাথায় আঘাত করে, আঘাতে সৈনিকটি মারা যায়। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিবাদ ছড়িয়ে পড়লো কিপচাক ও আফগান দুই সেনাপতির মধ্যে। তারা দুজনই সুলতান জালালউদ্দিনের কাছে গেল বলল ন্যায় বিচার না পেলে তারা যুদ্ধ ময়দান থেকে সুলতানকে ছেড়ে চলে যাবেন। মঙ্গোলদের সাথে লড়াই করতে হলে এই দুটি দলের সাহয্যই  জালালউদ্দীনের প্রয়োজন। জালালউদ্দিন তাদের মধ্যকার বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করলেন কিন্তু তার বিচারে সন্তুষ্ট না হয়ে কিপচাক সেনাপতি সাইফুদ্দিন তাকে ছেড়ে চলে যায়। জালালুদ্দিনের বাহিনী থেকে নিজের প্রায় ত্রিশ হাজার সৈন্য নিয়ে চলে যায় সাইফুদ্দিন।

আফগানিস্তানে চেঙ্গিসের আগমন :
                                                     সুলতান জালালউদ্দিনের বাহিনীতে যখন ভাঙন দেখা দিল তখন চেঙ্গিস খান নিজে জালালউদ্দিনের সাথে যুদ্ধ করতে আসলেন। কিন্তু সাইফুদ্দিন চলে যাওয়ায় জালালউদ্দিনের বাহিনী অত্যন্ত দূর্বল হয়ে গিয়েছিলো তাই জালালুদ্দিন ভারতের দিকে পালিয়ে যান, বিনা যুদ্ধে চেঙ্গিস খান আফগানিস্তানের বলখ ও গজনি দখল করে নেন এবং প্রায় ত্রিশ লাখের বেশি মানুষকে হত্যা করেন। জালালউদ্দিন ভারতের দিকে আসছিলেন কারণ ভারতের সম্রাট ইলতুৎমিশের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার একটা আশা ছিল। সুলতান জালালউদ্দিন ভারতের সিন্ধু নদী পর্যন্ত আসলেন কিন্তু প্রবল স্রোতের কারনে নদী পার হতে পারছিলেননা। এমন সময় চেঙ্গিস খানের বাহিনীও তার সন্ধান পেয়ে দ্রুত সিন্ধুর দিকে ঘোড়া হাঁকালেন। জালালউদ্দিন এখন বেকায়দায় পড়ে গেলেন, তার সামনে প্রবল স্রোতের সিন্ধু নদ যা তিনি কোনভাবেই পার হতে পারছিলেননা, দু পাশে বিশাল বিশাল পর্বত আর পেছনে চেঙ্গিস খানের বাহিনী। চেঙ্গিস খান সুলতান জালালউদ্দিনের বাহিনীকে এমন বেকায়দা অবস্থাতে পেয়ে গেলেন। চেঙ্গিস খান একটি ফরমান জারি করলেন যে কেউ হত্যা করবেনা, যদি কেউ জালালউদ্দিনের দিকে তীর ছোরে তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।
দুই পক্ষই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল, যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল জালালউদ্দিন ও তার সহযোগী তিমুর মালিক ও আল্পের খান লড়াই চালিয়ে যেতে থাকল। এ যুদ্ধে জালালউদ্দিন এমনভাবে যুদ্ধ করছিলেন যে চেঙ্গিস খানও মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেদিন জালালউদ্দিনের সামনে যেই এসেছিল সে আর বেঁচে ফিরতে পারেনি।  জালালউদ্দিনের এমন ঝড়ো আক্রমণে স্বয়ং চেঙ্গিস খানও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিলেন কিন্তু ততক্ষণে চেঙ্গিস খানের সংরক্ষিত সৈন্যরাও যুদ্ধক্ষেত্রে এসে আচমকা আক্রমণ চালালে সুলতান জালালউদ্দিন মঙ্গোলদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যান। জালালুদ্দিন হাজার সৈন্যের এ দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন কিন্তু তার সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সৈন্যই মারা যায়। পরাজয় নিশ্চিত দেখে সুলতান জালালউদ্দিন তার পরিবারকে নিরাপদ করতে চাইলেন কিন্তু সব রাস্তা বন্ধ ছিল তাই তিনি কয়েকজন সৈন্যকে তার মা, স্ত্রী ও সন্তানদের বস্তায় ভরে সিন্ধুর পানিতে ফেলে দেয়াদ আদেশ দিলেন। এমনটা তিনি করেছিলেন বর্বর মঙ্গোলদের অত্যাচার থেকে পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করার জন্য। এরপর অন্য সৈন্যরাও পানিতে ঝাপ দিতে লাগলো, কেউ বাচল আবার কেউ পানিতে ভেসে গেল। সবশেষে সুলতান জালালউদ্দিনও নদীতে ঝাপ দিলেন এবং নদীর ওপারে যেতে সক্ষম হলেন। পারে ওঠে জালালউদ্দিন খাপ থেকে তলোয়ার বের করে চেঙ্গিস খানের দিকে তাক করে বুঝালেন তিনি আবার যুদ্ধ করবেন। সেদিন সন্ধায় চেঙ্গিস খান বিস্মিত হয়ে সিন্ধুর দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। তিনি বলতে শুরু করলেন "ধন্য সেই মা যে এমন বাহাদুর সন্তানকে জন্ম দিয়েছে। চীনের জিয়া ও জিন রাজবংশের প্রায় আট লক্ষ্য সৈন্য আমার যা ক্ষতি করতে পারেনি মাত্র পঞ্চাশ-ষাট হাজার সৈন্য নিয়ে একুশ বছরের ছোট ছোকরাটি তা করতে পেরেছে। এমন ছেলেইতো কোনো বাপের হওয়া উচিত, যদি আমারও এমন( জালালউদ্দিনের মতো) একটা ছেলে থাকতো”। খাওয়ারিজম সম্রাজ্যকে পুরোপুরি দখলে আনতে চেঙ্গিস খানের প্রায় চার বছর সময় লেগেছিল।

চেঙ্গিস খানের মৃত্যু :
                              খাওয়ারিজম সম্রাজ্য জয় করে ১২২৩ সালে মঙ্গোলিয়ান স্তেপে ফিরে আসেন। ফিরে এসেই বৃদ্ধ খান বিশাল একটি কুরুলতাই(মঙ্গোল আমত্যদের বিশেষ সভা) ডাকলেন। এই কুরুলতাইয়ে চেঙ্গিস বিশাল মঙ্গোল সম্রাজ্যকে তার ছেলের মধ্যে বন্টন করে দেন এবং তৃতীয় ছেলে ওগেদাইকে সকলের নেতা তথা খান-ই-খানান( great khan) ঘোষণা করেন। ১৩২৬ সাল নাগাদ চেঙ্গিস খান তার সম্রাজ্য ছেলেদের মধ্যে বন্টন করে দেন।
চেঙ্গিস খানের মৃত্যু নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। তিনি ঠিক কিভাবে মরা গিয়েছিলেন তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারনা করা হয় তিনি বৃদ্ধ বয়সে ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন।
এইভাবেই শেষ হলো মঙ্গোলদের মহান নেতা ও পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম বিজেতা ও শাসকের জীবন।           

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ